ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণায় অস্থির কানাডা, ট্রুডোর পদত্যাগের দাবি জোরালো
- By Jamini Roy --
- 19 December, 2024
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকিতে অস্থির হয়ে উঠেছে কানাডার রাজনীতি। অর্থমন্ত্রী ক্রিষ্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের আকস্মিক পদত্যাগ এবং পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের দাবিতে বিরোধী দলের তোপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর থেকে কানাডার সরকার নীতি নির্ধারণে স্পষ্টভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
সোমবার অর্থমন্ত্রী ক্রিষ্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগের পর কানাডার ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। বিরোধী নেতারা অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্পের শুল্কের ফলে সাধারণ মানুষের স্বার্থ সুরক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন ট্রুডো। তারা আরও দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী নিজ দলের এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতেই ব্যস্ত ছিলেন, যা কানাডার অর্থনীতি এবং সাধারণ মানুষের জন্য ক্ষতিকর।
বিরোধী দলগুলোর দাবি, ট্রুডোকে পদত্যাগ করতে হবে এবং তার নেতৃত্বে লিবারেল পার্টি কানাডার স্বার্থ রক্ষায় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। পার্লামেন্টে এই ইস্যুতে বিতর্ক তীব্র হওয়ার পাশাপাশি অনাস্থা ভোটের সম্ভাবনাও বেড়েছে।
এই সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যেই কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে নতুন নিরাপত্তা নীতির ঘোষণা দিয়েছে ট্রুডো সরকার। যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসন এবং মাদক চোরাচালান ঠেকাতে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনে যৌথ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সরকার ১৩০ কোটি কানাডিয়ান ডলার বরাদ্দ করেছে।
ট্রুডো সরকার জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসন রোধে সীমান্তে প্রযুক্তিগত নজরদারি ব্যবস্থা জোরদার করা হবে এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে তৎপরতা আরও বাড়ানো হবে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আত্মবিশ্বাসী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, “কানাডা অতীতেও বড় বড় সংকট পেরিয়ে এসেছে। মহামারি এবং মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলার অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। লিবারেল পার্টি সবসময় সুষ্ঠু এবং ন্যায্য অর্থনীতিকে সমর্থন করেছে, যা শুধুমাত্র ধনী শ্রেণির জন্য নয়, বরং সাধারণ মানুষের জন্যও কার্যকর।”
তবে বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে ট্রুডোর এই আত্মবিশ্বাস কতটা টিকবে, তা নিয়ে সন্দিহান বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধের সম্ভাবনা জাস্টিন ট্রুডোর রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও দুর্বল করে তুলেছে। এই অবস্থায় পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের আয়োজন হলে লিবারেল পার্টিকে ক্ষমতা ধরে রাখা কঠিন হবে।
বিরোধী দলের চাপ এবং অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা কানাডার রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই নতুন নির্বাচনের আয়োজনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
কানাডার জনগণের স্বার্থ রক্ষায় ট্রুডোর পদক্ষেপ যথেষ্ট ছিল কি না, তা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক চলছে। তার পদত্যাগের দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে, যা কানাডার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে।